ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্ন প্রস্তুতি ও দাখিল নির্দেশিকা – বিস্তারিত গাইড (Excel Auto Form)

Personal Income Tax File
Author: Shibli zaman | September 29, 2024

DOWNLOAD AUTOMATIC EXCEL RETURN FORM

বাংলাদেশে ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্ন দাখিল একটি বাধ্যতামূলক প্রক্রিয়া, যা দেশীয় কর আইন অনুযায়ী নাগরিকদের আয়ের উপর কর নির্ধারণ এবং প্রদান নিশ্চিত করে। আয়কর রিটার্ন দাখিলের মাধ্যমে করদাতারা তাদের আয়ের উৎস, ব্যয়, এবং করযোগ্য আয়ের হিসাব দেন, যার ভিত্তিতে নির্ধারিত কর প্রদান করতে হয়। এই প্রক্রিয়া অনেক নতুন করদাতাদের জন্য জটিল মনে হতে পারে, তবে সঠিক নির্দেশনা অনুসরণ করলে এটি সহজভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব।

এই গাইডে, আমরা বাংলাদেশে আয়কর রিটার্ন কীভাবে প্রস্তুত ও দাখিল করতে হয় তা বিশদভাবে আলোচনা করব।

১. আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা

আয়কর রিটার্ন দাখিল সবার জন্য বাধ্যতামূলক নয়। তবে যাদের বার্ষিক আয় সরকার নির্ধারিত করমুক্ত সীমার বেশি, তাদের আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। এছাড়াও, ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (TIN) থাকলে এবং ৫১টি সেবা পেতে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়া বাধ্যতামূলক। ২০২৪-২৫ করবছরের জন্য করমুক্ত সীমাগুলো নিম্নরূপ:

  • সাধারণ পুরুষ নাগরিকদের জন্য: ৩,৫০,০০০ টাকা
  • মহিলাদের ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য: ৪০০,০০০ টাকা
  • ৩য় লিঙ্গ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য: ৪,৭৫,০০০ টাকা
  • মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য: ৫,০০,০০০ টাকা

যাদের আয় এই সীমার বাইরে তারা অবশ্যই আয়কর রিটার্ন দাখিল করবেন।

২. আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ তারিখ

প্রত্যেক অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ সময়সীমা নভেম্বর ৩০, যা ট্যাক্সডে নামে পরিচিত। তবে, কোনো কারণে দাখিলের তারিখ পেরিয়ে গেলে জরিমানা আরোপিত হতে পারে। প্রয়োজন হলে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করা যায়। কিন্তু আবেদন মঞ্জুর হওয়ার নিশ্চয়তা নেই, তাই সময়মতো রিটার্ন জমা দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

DOWNLOAD AUTOMATIC EXCEL RETURN FORM

৩. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও তথ্য

আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও তথ্য সংগ্রহ করা প্রয়োজন। এগুলো হলো:

  • ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার (TIN): TIN সনদপত্র বা প্রমাণপত্র
  • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID): পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট: আপনার আর্থিক লেনদেনের বিবরণ
  • বেতন সনদপত্র: যদি আপনি বেতনের উপর নির্ভরশীল হন, তাহলে বেতন সনদপত্র সংগ্রহ করুন
  • বিনিয়োগ সংক্রান্ত দলিল: যেমন ফিক্সড ডিপোজিট রসিদ, সঞ্চয়পত্র, শেয়ারের বিনিয়োগ ইত্যাদি
  • সম্পত্তি আয়ের বিবরণ: ভাড়ার আয় বা জমির আয় সংক্রান্ত কাগজপত্র
  • ব্যয় ও ভাতা: চিকিৎসা ব্যয়, শিক্ষা ব্যয়, জীবন বীমা প্রিমিয়াম ইত্যাদির কাগজপত্র

৪. আয়কর রিটার্ন ফর্ম পূরণ করার ধাপসমূহ

৪.১ ফর্ম সংগ্রহ

আয়কর রিটার্ন ফর্ম জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (NBR) ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া যায়। এছাড়াও, স্থানীয় কর অফিস থেকে এটি সংগ্রহ করা যায়। ফর্মের ধরন নির্ভর করে করদাতার আয়ের উৎসের উপর। ব্যক্তিগত আয়ের জন্য নির্দিষ্ট ফর্ম ব্যবহার করতে হবে, যেমন:

  • সাধারণ ব্যক্তি করদাতা ফর্মঃ IT GA (2023) Download Form
  • একপাতা ব্যক্তি করদাতা ফর্মঃ IT GHA (2023) (শুধুমাত্র ৫ লক্ষ টাকার নিচের করযোগ্য আয় ও ৪০ লক্ষ টাকার নিচে নীট সম্পদের জন্য) Download Form
  • রির্টান প্রাপ্তিস্বীকার পত্রঃ IT 11 Chha (2023) Download Form

DOWNLOAD AUTOMATIC EXCEL RETURN FORM

৪.২ তথ্য পূরণ

ফর্মে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নাম, ঠিকানা, TIN, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করতে হবে। এরপর, আপনার আয়ের বিবরণ দিতে হবে, যেমন:

  • মোট আয়ের বিবরণ: বেতন, ব্যবসায়িক আয়, সম্পত্তির আয়, বা অন্য কোনো আয়ের উৎস।
  • ব্যয় ও বিনিয়োগের বিবরণ: চিকিৎসা ব্যয়, জীবন বীমা প্রিমিয়াম, শিক্ষা ব্যয়, এবং বিভিন্ন বিনিয়োগের খরচ।
  • সম্পদ বিবরণ: সকল ধরনে স্থায়ী ও অস্থায়ী সম্পদ ও দায়  ফর্মে দিতে হবে।

৫. ট্যাক্স পরিশোধের প্রক্রিয়া

আয়কর রিটার্ন দাখিলের পর যদি কর প্রদানের প্রয়োজন হয়, তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর পরিশোধ করতে হবে। ট্যাক্স পরিশোধ করতে সাধারণত ব্যাংকের মাধ্যমে চেক বা ক্যাশ জমা দিতে হয় এবং কর পরিশোধের রসিদ সংগ্রহ করতে হয়।

  • চালান ফরম: ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য এ-চালান ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে। অথবা অনলাইনে এ-চালাণের মাধ্যমেও বিভিন্ন উপায়ে পরিশোধ করা যায়।
  • কর রসিদ: কর পরিশোধের পর ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত রসিদ অথবা এ-চালানের অনলাইন পরিশোধ কপি সংরক্ষণ করুন, যা প্রমাণ হিসেবে রির্টানের সাথে জমা দিতে হবে।

৬. আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার উপায়

বাংলাদেশে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার দুটি প্রধান উপায় রয়েছে:

  • ম্যানুয়াল দাখিল: আপনার পূরণ করা রিটার্ন ফর্ম প্রিন্ট করে নির্ধারিত কর অফিসে জমা দিতে হবে। রিটার্ন জমা দেওয়ার পর প্রাপ্তি রসিদ সংগ্রহ করতে ভুলবেন না।
  • অনলাইন দাখিল (ই-ফাইলিং): NBR-এর ই-ফাইলিং পোর্টাল ব্যবহার করে অনলাইনেও রিটার্ন দাখিল করতে পারেন। এখানে আপনাকে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য অনলাইনে পূরণ করে দাখিল করতে হবে।

৭. কর রিবেট ও ছাড়

কিছু নির্দিষ্ট খাতে বিনিয়োগ করলে আপনি কর রিবেট বা কর ছাড় পেতে পারেন। বিনিয়োগের ধরন অনুযায়ী করের উপর রিবেট নির্ধারিত হয়, যা করদাতার করযোগ্য আয়ের থেকে বাদ দেওয়া হয়। বিনিয়োগের ধরনগুলো নিম্নরূপ:

  • জীবন বীমা প্রিমিয়াম
  • সরকারি বা পোস্টঅফিস সঞ্চয়পত্র
  • শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ

DOWNLOAD AUTOMATIC EXCEL RETURN FORM

৮. জরিমানা এড়ানোর উপায়

আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে গেলে করদাতার উপর অতিরিক্ত জরিমানা আরোপিত হতে পারে। তাই সময়মতো রিটার্ন জমা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশে আয়কর দাখিলের জন্য সাধারণত ৩০ নভেম্বর শেষ তারিখ থাকে।

উপসংহার

ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্ন দাখিল বাংলাদেশের কর আইনের একটি অপরিহার্য অংশ। এটি দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আপনার আয়ের সঠিক হিসাব প্রদান নিশ্চিত করে এবং সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পে অবদান রাখতে সাহায্য করে। রিটার্ন দাখিল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার আয়ের সঠিক হিসাব প্রদান করতে পারেন, যা আর্থিক ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং জরিমানা থেকে রক্ষা করবে। এই গাইড অনুসরণ করে, আপনি সহজেই ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্ন প্রস্তুত ও দাখিল করতে পারবেন।

Tax, Blogs, Knowledge Base

Let’s Talk

Explore how SRCO's expertise in audit, accounting, and advisory services can empower your business. Contact us today for tailored financial insights and strategic guidance.

Address

Zeenat Bhaban (5th Floor),
41/1 Kazi Nazrul Islam Avenue,
Kawranbazar, Dhaka 1215.

Phone
+880-1880-200 222
Email
admin@srcobd.com
Social